আমদানি-রফতানি বাণিজ্য (Export import business) কিভাবে শুরু করবো?

 

বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ নিচে উপস্থাপন করা হলো:


১. ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রণয়ন:


- রপ্তানি বা আমদানির জন্য পণ্য নির্বাচন করুন।  

  উদাহরণস্বরূপ:


  -রপ্তানি: তৈরি পোশাক, চা, চামড়াজাত সামগ্রী, হিমায়িত মাছ (চিংড়ি), পাট ও এর তৈরি দ্রব্য।

  

  - আমদানি: ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, শিল্পযন্ত্র, রাসায়নিক কাঁচামাল।  


- টার্গেট বাজার বিশ্লেষণ করুন (যেমন: ইউরোপীয় ইউনিয়ন,ড়,ড়, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া)।

  

- বাজার গবেষণার মাধ্যমে প্রতিযোগী ও ভোক্তার চাহিদা মূল্যায়ন করুন।


২. আইনগত অনুমোদন ও নিবন্ধন:


- বাণিজ্য লাইসেন্স: স্থানীয় পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে সংগ্রহ করুন।  


- ইআরসি (ERC) ও আইআরসি (IRC): আমদানি-রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আবেদন করুন।  


- টিআইএন (TIN): প্রতিষ্ঠানের জন্য কর শনাক্তকারী নম্বর নিন।  


- ভ্যাট নিবন্ধন: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ভ্যাট সার্টিফিকেট সংগ্রহ করুন।  


- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট: আমদানি-রপ্তানির জন্য কর্পোরেট অ্যাকাউন্ট খুলুন ও এলসি (LC) প্রক্রিয়া শিখুন।


৩. প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগ স্থাপন:

- রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB): রপ্তানি সহায়তার জন্য এখানে নিবন্ধিত হোন।  


- বাণিজ্য সংস্থা:স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক চেম্বার অব কমার্সে যোগ দিন।  


- লজিস্টিকস পার্টনার: নির্ভরযোগ্য ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার বা শিপিং এজেন্ট নির্বাচন করুন।


৪. সরবরাহকারী ও ক্রেতা অনুসন্ধান:

- অনলাইন প্ল্যাটফর্ম:bAlibaba, Global Sources, বা TradeKey-এ প্রোফাইল তৈরি করুন।  

- বাণিজ্য মেলা: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মতো ইভেন্টে অংশ নিন।  


- নেটওয়ার্কিং: শিল্প সংগঠন ও ব্যবসায়িক ফোরামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করুন।


৫. পণ্যের মান ও ডকুমেন্টেশন:

- পণ্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (ISO, CE) মেনে চলছে কি না যাচাই করুন।  

- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করুন:  

  - বাণিজ্যিক ইনভয়েস  

  - প্যাকিং তালিকা  

  - উৎপত্তিসনদ (Certificate of Origin)  

  - কাস্টমস ঘোষণাপত্র  


৬. পরিবহন ও কাস্টমস ব্যবস্থাপনা:

- পণ্য শিপিংয়ের জন্য HS কোড ব্যবহার করে শ্রেণিবদ্ধ করুন।  

- কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করুন বা নিজে প্রক্রিয়া শিখুন।  

- সমুদ্রপথ, বিমান বা স্থলপথে পরিবহনের সাশ্রয়ী বিকল্প বেছে নিন।


৭. আর্থিক লেনদেনের পদ্ধতি:

- নিরাপদ লেনদেনের জন্য লেটার অব ক্রেডিট (LC)ব্যবহার করুন।  

- PayPal, Wise, বা SWIFT-এর মতো প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।  

- মুদ্রা বিনিময়ের হার ও ব্যাংক চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন।

৯. বিপণন কৌশল:

- গুগল এডস ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছান।  

- পেশাদার ওয়েবসাইট তৈরি করে পণ্যের বিস্তারিত তুলে ধরুন।  

- কাস্টমার রিভিউ ও টেস্টিমোনিয়াল ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করুন।


৯. টেকসই ব্যবসায়িক সম্পর্ক:

- ক্রেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন ও ফিডব্যাক নিন।  

- পণ্য ডেলিভারির সময়সীমা ও গুণগত মান বজায় রাখুন।  

- নতুন বাজার অনুসন্ধানের জন্য সরকারি INCENTIVE প্রোগ্রাম (যেমন: cash incentive) করুন।

অনলাইনে প্রতিদিন ১০০ ডলার ইনকাম করার উপায় -Ways to earn $100 a day online 


উপসংহার: অল্প বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে সম্প্রসারণ করুন।  

- বাজার গবেষণা ও ডকুমেন্টেশনের জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করুন।  

- আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা ও শুল্ক আইন আপডেট রাখুন।  


এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে আইনি জটিলতা এড়িয়ে সফলভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।